রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫২ অপরাহ্ন
শ্রীলংকা অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সঙ্গে চারদিনের যুব আন্তর্জাতিক ম্যাচ ড্র করেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল।
বরিশাল শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) ম্যাচের শেষ দিনে ড্র মেনে নেয় দুই প্রতিপক্ষ।
ম্যাচ ড্র হলেও প্রথমবারের মতো বরিশাল শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই যুব আন্তর্জাতিক ম্যাচকে ঘিরে দর্শকদের উৎসাহের কোনো কমতি ছিল না। খেলার শুরু থেকেই মাঠে ছিল ক্রিকেটপ্রেমী ও দর্শকদের উপচে পড়া ভিড়। পাশাপাশি ক্রিকেট ম্যাচকে ঘিরে স্টেডিয়াম এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়।
শেষ দিনে দুপুরে শ্রীলংকা অনূর্ধ্ব-১৯ দল ৮৪ ওভার ৩ বলের খেলা শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩৩১ রান করে প্রথম ইনিংস ডিক্লেয়ার করে। ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল ৪৮ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪৫ রান তুলতে পারে।
এর আগে সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম দিন শেষে ৭ উইকেট হাতে নিয়ে দলীয় স্কোরবোর্ডে ১৫৫ রান তুলে ক্রিজ ছেড়েছিলেন শ্রীলংকা দল। এরপর মঙ্গলবার সকাল ৯টায় আবারও মাঠে নেমে ব্যাটিং শুরু করেন দলীয় অধিনায়ক নিপুন ধনাঞ্জয়া ও গামাগে দিনুষা। দ্বিতীয় দিনের খেলার শুরুতে উভয়ই অর্ধশত করে রান তুলে নেন। যা বরিশাল শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়ামের ইতিহাসে একটি রেকর্ড।
১১০ বলে ৭টি চার ও ১টি ছয় হাকিয়ে ৫৮ রান তোলা গামাগে দিনুষা বাংলাদেশ দলের বলার আশরাফুল ইসলাম সিয়ামের বলে প্রীতম কুমারের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফেরেন। অপরদিকে ১১২ বলে ৬টি চার ও ৩টি সিক্স হাকিয়ে ৬৭ রান তোলা শ্রীলংকান অধিনায়ক নিপুন ধনাঞ্জয়া বাংলাদেশ দলের বলার আশরাফুল ইসলাম সিয়ামের বলে সাহাদাত হোসেনের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফেরেন।
এরপর বাংলাদেশ দলের বলার আশরাফুল ইসলাম সিয়ামের বলে তৃতীয় শিকার হন চিহান কালিদু। যিনি ১৬ বলে ১টি চার ও ১টি ছয় হাঁকিয়ে ১৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন। তবে শেষ পর্যন্ত ম্যাচের তৃতীয় অর্ধশত করে নটআউট থেকে যান ডুনিথ নেথমিকা ভেল্লাজে। যিনি ৮৫ বলে ৫টি চার হাকিয়ে ৫০ রান করেন।
এদিকে ৮৪ ওভার ৩ বলে ম্যাচ ডিক্লেয়ারের আগে শ্রীলংকা দলের কাভিস্কা লক্ষনকে ক্যাচ আউট করে ৭ নম্বর উইকেটটি তুলে নেয় বাংলাদেশ দলের বলার নোমান চৌধুরী। কাভিস্কা লক্ষন ৭৮ বলে ২টি চার ও ৩টি ছয় হাকিয়ে ৪৬ রান করেন। এছাড়া ৮৪ ওভার ৩ বলের খেলায় শ্রীলংকা দলের অতিরিক্ত রান এসেছে ২৮টি।
বাংলাদেশ দলের হয়ে আশরাফুল ইসলাম সিয়াম দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন। এটিও শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়ামের ইতিহাসে একটি রেকর্ড। তিনি ২৯ ওভার বল করে ৬ মেইডেন নিয়েছেন এবং ৮৩ রান দিয়েছেন। এছাড়া সাত জন বলারের মধ্যে আব্দুল্লাহ হিল গালিব ও নোমান চৌধুরী দু’টি করে উইকেট নেন।
অপরদিকে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা তেমন একটা ভালো না হলেও, দলের হয়ে প্রথম অর্ধশত রান করেন আলভি হক। তিনি একশ’ বলে ৭টি চার ও ১টি ছয় হাঁকিয়ে ৫৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন। বাকীদের মধ্যে সাজিদ হোসেন সিয়াম ৫২ বলে ২৩ রান, প্রীতম কুমার ৩৯ বলে ২৮ রান করে সাজঘরে ফেরেন। এছাড়া নাইমুর রহমান নয়ন ৭৫ বলে ২৬ রান করেন ও আশরাফুল ইসলাম সিয়াম ১৪ বলে ২ রান করে অপরাজিত থাকেন।
বাংলাদেশের বিপক্ষে শ্রীলংকান বোলারদের মধ্যে ম্যাথিশা পাথিরানা ৬ ওভার ২ বল করে, ১ ওভার মেইডেন ও সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় হন। এ দলের অপর ৬ বোলারের মধ্যে কাভিস্কা লক্ষন ৬ ওভার ৪ বল করে ৩ ওভার মেইডেন নিয়ে ২টি উইকেট এবং দিলসান ৮ ওভার বল করে ২ ওভার মেইডেন নিয়ে ১টি উইকেট নেন। এ দলের বোলাররা ৪৮ ওভার বল করে ১০টি অতিরিক্ত রান দিয়েছে বাংলাদেশকে।
উল্লেখ্য, চারদিনব্যাপি ম্যাচ গত ২৬ অক্টোবর শুরু হওয়ার কথা থাকলেও দুর্যোগপূর্ন আবহাওয়ার কারনে দুইদনি পরিত্যাক্ত ঘোষনা হয়। এরপর ম্যাচ রেফারি এ এস এম রকিবুল হাসানের দেয়া ঘোষানার প্রেক্ষিতে তৃতীয় দিন সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটায় খেলা শুরু হয়।